মেকআপ ব্রাশ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম

 

যেকোনো অনুষ্ঠানে কিংবা প্রতিদিনের কাজ এ আমরা হালকা থেকে ভারী সব ধরণের মেকআপ করে থাকি। সবাই চায় নিজেকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে ধরতে। আজকাল সব মেয়েরাই মেকআপ সচেতন এবং নতুন নতুন মেকআপ সামগ্রী ব্যবহার করতে ভালোবাসে। তবে অনেক মেকআপ সামগ্রী থাকার পরেও যদি আমরা সঠিক ব্যবহার না জানি তাহলে কোনো লাভই নেই। তবে এর মধ্যে অন্যতম প্রয়োজনীয় সামগ্রী হলো মেকআপ ব্রাশ। আমাদের মেকআপ কে আরো নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে মেকআপ ব্রাশ এর জুড়ি নেই। তবে চলুন জেনে নেয়া যাক মেকআপ এর সময় কোথায় কিভাবে আমরা ব্রাশ ব্যবহার করবো।   

১। ফাউন্ডেশন ব্রাশ: মুখের ফাউন্ডেশন সুন্দর করে বসার জন্য বা ফুল কভারেজ এর জন্য এই ব্রাশ ব্যবহার করা হয়। এতে ফাউন্ডেশন সুন্দর করে বসে যায় এবং সুন্দর একটা বেইজ তৈরী হয়।

২। কনসিলার  ব্রাশ: এটি আকারে ছোট কিংবা মিডিয়াম সাইজ এর ব্রাশ। মুখের কোথাও দাগ থাকলে কিংবা ডার্ক সার্কেল থাকলে সেখানে কনসিলার ব্রাশ দিয়ে কনসিলার  লাগানো হয়।  

৩। পাউডার ব্রাশ : এই ব্রাশটি বেশ ঘন ফাইবার দিয়ে বানানো হয়। লুজ পাউডার কিংবা কম্প্যাক্ট পাউডার যেকোনোটাই এই ব্রাশ দিয়ে লাগানো যায়। এই ব্রাশ এর সাহায্যে পাউডার লাগিয়ে নিলে খুব সুন্দর ফিনিশিং আসে।   

৪। কন্টোরিং / ব্রোঞ্জিং ব্রাশ: এই ব্রাশ এর মাধ্যমে আমরা আমাদের মুখের চোয়ালের অংশে এবং নাকে কিছুটা ডার্ক শেড দিয়ে কন্টোরিং বা ব্রোঞ্জিং করে থাকি এতে করে আমাদের মুখ কিছুটা চিকণ দেখায়। মুখের কাঠামো আরো ফুটে উঠে।  

৫। ব্লাশ ব্রাশ:যারা ব্লাশ দিতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এই ব্রাশ টা অনেক জরুরি। ব্লাশ ব্রাশের মাথা গোলাকার হয়ে থাকে এবং এতে ব্লাশ চিকবোনে সুন্দর করে বসে। অনেকেই ফাউন্ডেশন ব্রাশ দিয়ে ব্লাশ লাগিয়ে ফেলেন যা ঠিক নয় এতে ব্লাশ সুন্দর করে ব্লেন্ড হতে পারেনা।  

৬ । ফ্ল্যাট ব্রাশ : ফ্ল্যাট ব্রাশ দেখতে চেপ্টা গোলাকার এবং এই ব্রাশের সকল ফাইবার সমান থাকে। অনেকে এই ব্রাশ দিয়ে নাকে, কপালে কিংবা গালের চিকবোনে ব্লাশ এবং হাইলাইটার ব্যবহার করে থাকেন। 

৭ । হাইলাইটার ব্রাশ: ব্লাশ দেবার পর হাইলাইটার দেয়ার পালা। হাইলাইটার ব্রাশ গোলাকার হয়ে থাকে এবং ঘন ফাইবার দিয়ে বানানো হয়ে থাকে। সঠিক জায়গায় হাইলাইট করতে হলে অবশ্যই এই ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে।

৮ । আইশ্যাডো ব্রাশ: চোখের সাজকে আকর্ষণীয় করে তুলতে আইশ্যাডো ব্রাশ এর বিকল্প নেই। ছোট আকারের এই ব্রাশ দিয়ে চোখের পাতায় এবং নিচে নিখুঁতভাবে আইশ্যাডো লাগাতে পারবেন। এতে চোখের আশেপাশে বাড়তি শ্যাডো ছড়িয়ে পড়বেনা এবং আইশ্যাডো সুন্দর করে ব্লেন্ডিং হয়। 

৯ । ব্লেন্ডিং ব্রাশ: ব্লেন্ডিং ব্রাশ দিয়ে আইশ্যাডো ব্লেন্ড করা হয়। চোখের পাতায় বিভিন্ন রং ব্যবহার করে তা মিশিয়ে না নিলে দেখতে খারাপ দেখায়। চোখের সাজ পুরোটাই নির্ভর করে আপনার আইশ্যাডো কতটা সুন্দর করে ব্লেন্ড হয়েছে তার উপর। ছোট সাইজ এর ব্লেন্ডিং ব্রাশ দিয়ে আইশ্যাডো দেয়া হয় এবং মাঝারি সাইজ এর ব্রাশ দিয়ে ব্লাশ কিংবা হাইলাইটার ও দেয়া যায়। 

১০ । আই-ব্রো ব্রাশ: চোখ এর সাজের অধিকাংশ নির্ভর করে আপনার আইব্রোর শেইপ কতটা সুন্দর করে এঁকে নিয়েছেন তার উপর। তার জন্য ব্যবহার করতে পারেন আইব্রো ব্রাশ। এই ব্রাশে থাকে ছোট মাসকারার ব্রাশের মত স্পুলি ও অন্য পাশে এঙ্গেল ব্রাশ যা দিয়ে আইব্রোর শেইপ ঠিক করা হয়। 

১১। আইলাইনার ব্রাশ: সাধারণত আমরা লিকুইড আইলাইনার ব্যবহার করে থাকি কিন্তু যারা জেল আইলাইনার বা ক্রীম আইলাইনার ব্যবহার করি তাদের জন্য আইলাইনার ব্রাশ খুবই জরুরি। অনেক চিকণ এই ব্রাশ দিয়ে আপনার যেভাবে খুশি সেভাবে আইলাইনার লাগিয়ে নিতে পারবেন। 

১২ । লিপ ব্রাশ: লিপস্টিক ছাড়া আমাদের পুরো সাজই অসম্পূর্ণ। তাই ঠোঁট কে ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহার করতে পারেন লিপ ব্রাশ। এই ব্রাশটির ফাইবার কম, পাতলা এবং চিকন হয়ে থাকে। যারা  খুব নিখুঁতকরে লিপস্টিক দিতে পছন্দ করেন তাদের জন্যই এই ব্রাশ।

তাহলে আমরা জেনে নিলাম কোন ব্রাশ আমরা কোথায় ব্যবহার করবো। আশা করছি ব্রাশ এর সঠিক ব্যবহার করে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন এবং নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারবেন আপনার কাঙ্খিত সাজে।