গর্ভাবস্থায় এক্সারসাইজ

গর্ভাবস্থায় আপনার নিজেকে এবং শিশুকে সুস্থ রাখার জন্য শরীরে পরিপূর্ণ পুষ্টি নিশ্চিত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য সময়ের মত গর্ভাবস্থায় শারীরিক এক্সারসাইজ করাও জরুরি।

পুষ্টিঃ

গর্ভাবস্থায় এক্সারসাইজ করার জন্য আপনার শরীরে কি কি পুষ্টি উপাদান দরকার তা জেনে নিতে হবে। আপনি অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহন করবেন। এছাড়াও খেয়াল রাখতে হবে যে আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণ ফলিক এসিড, ভিটামিন বি ইত্যাদি নিচ্ছেন। কারণ এসব উপাদান শিশুর জন্মের সময় বিভিন্ন ঝুঁকি কমায়। এছাড়া আপনার ডাক্তার আপনাকে prenatal vitamin pill খাওয়ার উপদেশ দিতে পারেন। prenatal vitamin pill এ শুধু ফলিক এসিড এবং অন্যান্য ভিটামিন ই থাকেনা, পাশাপাশি আয়রন, ক্যালসসিয়াম, মিনারেল এবং প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড থাকে। এছাড়া আপনি যদি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে কোন হারবাল প্রতিষেধক গ্রহন করে থাকেন তাহলে অবশ্যই তা আপনার ডাক্তারকে জানান।

দুজনের জন্য যথেষ্ট হয় এমন খাবার খান

গর্ভাবস্থায় এক্সারসাইজ করার জন্য আপনার ডায়েট চার্ট টি এমনভাবে প্রস্তুত করুন যাতে তা আপনার এবং আপনার শিশুর দুজনের জন্যই যথেষ্ট হয়। এমনভাবে আপনার ডায়েট চার্ট করুন যাতে তার মধ্যে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান বিদ্যমান থাকে। খেয়াল রাখবেন যাতে আপনার ডায়েটে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন এবং মিনারেল থাকে। এসময়ে কোনভাবেই লো – ক্যালরি ডায়েট করা যাবেনা। গর্ভাবস্থায় সাধারণ সময়ের চাইতে অধিক পরিমাণে প্রোটিন গ্রহন করুন। আপনার শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য এই এক্সট্রা ক্যালরি প্রয়োজন।

এক্সারসাইজ

অন্যান্য সময় এক্সারসাইজ করা যতটা গুরুত্বপূর্ণ, গর্ভাবস্থায় এক্সারসাইজ করাও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কোন কোন এক্সারসাইজ করতে পারবেন আর কোন কোন এক্সারসাইজ করতে পারবেন না সে ব্যাপারে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। বিশেষ করে যদি আপনি নিয়মিত এক্সারসাইজে অভ্যস্ত না হয়ে থাকেন তাহলে আপনার ডাক্তার আপনাকে হালকা কোন এক্সারসাইজ করার পরামর্শ দিতে পারেন। কিন্তু কোনভাবেই অতিরিক্ত মাত্রায় এক্সারসাইজ করা যাবেনা। অবশ্যই এক্সারসাইজের সময় প্রচুর পানি পান করুন।

কারা এক্সারসাইজ করবেন না

আপনার যদি কোন ধরণের মেডিক্যাল সমস্যা যেমন – অ্যাজমা, হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি রোগ থেকে থাকে তাহলে আপনার কোন ধরণের এক্সারসাইজ না করাই ভালো কিন্তু ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আপনি এক্সারসাইজ করতে পারেন। এছাড়া আপনার যদি বিভিন্ন সমস্যা যেমন-

  • ব্লিডিং
  • Low Placenta
  • মিসক্যারেজ
  • আগে যদি প্রিম্যাচুর বার্থ হয়ে থাকে
  • দুর্বল সারভিক্স

থেকে থাকে তাহলে আপনি এক্সারসাইজ করবেন না।

গর্ভাবস্থায় কোন কোন এক্সারসাইজ করা নিরাপদ

সতর্কতার সাথে করলে গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ এক্সারসাইজ করাই নিরাপদ।

এ অবস্থায় সবচাইতে নিরাপদ কিছু এক্সারসাইজ হচ্ছে – সাঁতার কাঁটা, ব্রিস্ক ওয়াক, ইনডোর সাইক্লিং ইত্যাদি। এ ধরণের এক্সারসাইজে ঝুঁকি কম এবং শিশুর জন্মের আগ পর্যন্ত করা যেতে পারে।

গর্ভাবস্থায় কোন কোন এক্সারসাইজ এড়িয়ে চলা উচিত?

কিছু এক্সারসাইজ আছে যেগুলো গর্ভাবস্থায় করলে ক্ষতি হতে পারে, যেমন –

  • যেকোনো এক্সারসাইজের সময় নিঃশ্বাস বন্ধ রাখলে
  • যেসব এক্সারসাইজ করার সময় পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • ফুটবল, বাস্কেটবল এবং ভলিবল খেলা
  • সিট আপ, লেগ রেইজ ইত্যাদি করা
  • বেশি গরম আবহাওয়ায় এক্সারসাইজ করা

গর্ভবতী মহিলাদের জন্য সতর্কতা

যদি আপনার মধ্যে নিচের সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি বা এর অধিক দেখা দেয় তাহলে আপনি এক্সারসাইজ বন্ধ করে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন-

  • বুকে ব্যাথা হলে
  • তলপেটে ব্যাথা হলে
  • মাথাব্যাথা হলে
  • দুর্বল লাগলে
  • ছোট ছোট শ্বাস নিলে
  • হাঁটতে কষ্ট হলে
  • পেশী দুর্বল হলে

ডেলিভারির কত সময় পর আপনি এক্সারসাইজ করতে পারবেন

আপনি ডেলিভারির কতদিন পর এক্সারসাইজ শুরু করতে পারবেন এ ব্যাপারে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন।

নরমাল ডেলিভারির ১-২ সপ্তাহ পড়েই বেশিরভাগ মহিলারা এক্সারসাইজ শুরু করতে পারেন। আর আপনার যদি সি সেকশন ডেলিভারি হয় তবে সেক্ষেত্রে আপনি ৩-৪ সপ্তাহ পর এক্সারসাইজ শুরু করতে পারেন। তবে অবশ্যই এর আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিবেন।

সূত্রঃ ইন্টারনেট